আগামী বছর ‘ডিজিটাল ইন্টারঅ্যাক্টিভ’ পাঠ্যপুস্তকে পাঠদান
শুরুর উদ্যোগ
নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগের আওতায় ‘ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান
ট্যাব’ স্লোগান
দিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে ট্যাব
তুলে দেবে সরকার।
এজন্য পাঠ্যপুস্তকের ডিজিটাল ভার্সন থেকে ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল বুক’ তৈরি
করছে মন্ত্রণালয়।
শিক্ষাসচিব নজরুল
ইসলাম খান বলেন, স্কুল, মাদ্রাসা এবং
কারিগরির সব শিক্ষার্থীকে
‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল’ পাঠ্যবইয়ের
মাধ্যমে পাঠদান করা হবে। শিগগিরি ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল পাঠ্যবই তৈরির কাজ শেষ
হবে। শিক্ষার্থীদের
ট্যাব সরবরাহের জন্য দাতা খোঁজা হচ্ছে। ট্যাবে বন্দি পাঠ্যপুস্তকে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ
বাড়বে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি
বইয়ের কঠিন শব্দ, বাক্য, বিষয় সহজভাবে বোঝানোর
জন্য এনিমেশন ব্যবহার করা হবে। ছবি থাকবে রঙ্গিন। প্রয়োজনীয় ভিডিও যুক্ত করে তুলে
ধরবে ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল’ পাঠ্যপুস্তক।
কিছু বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হাইপার লিঙ্কে ক্লিক করে তথ্য পাওয়া যাবে।
শিক্ষাসচিব জানান, ষষ্ঠ শ্রেণির
শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের হাতে তুলে
দেওয়ার জন্য প্রায় ২৫ লাখ ট্যাব প্রয়োজন হবে। ষষ্ঠ শ্রেণির
সাধারণ বিষয়ের ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আর মাদ্রাসার চারটি
বই তৈরি করছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।
কুরআন মজিদ, আকাইদ ও ফিকহ্, আরবী প্রথম ও আরবী
দ্বিতীয় পত্র- এ চারটি
বইয়ের ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল’ ভার্সন
তৈরি করা হচ্ছে। শিক্ষা
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রোকসানা মালেক
বাংলানিউজকে বলেন, আগামী
অক্টোবর মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তকের ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল ভার্সন তৈরি
শেষ হবে।
মাদ্রাসা শিক্ষা
বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফ উল্যাহ বলেন,
ষষ্ঠ
শ্রেণির চারটি বইয়ের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এখন এনিমেশন তৈরির
কাজ চলছে। কারও ধর্মীয়
অনুভূতিতে যেন আঘাত না লাগে সে বিষয়টি মাথায় রেখে এনিমেশন তৈরি করা হচ্ছে।
বইয়ের স্ক্রিপ্ট তৈরি করে একাধিক কর্মশালা করা হয়েছে।
এনসিটিবি প্রণিত
সাধারণ শিক্ষার প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকগুলো ডিজিটাল ভার্সনেও
(ই-বুক) রুপান্তর করা হয়েছে।এনিমেশন
চূড়ান্ত হলে অনুমোদনের জন্য তা এনসিটিবিতে দেওয়া হবে বলে
জানিয়েছেন মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান। এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র
পাল বলেন, জাতীয়
কমিটিতে ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল’ পাঠ্যপুস্তক
চূড়ান্ত অনুমোদন হবে। ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল’ পাঠ্যপুস্তক
বলতে পাঠ্যপুস্তকের ডিজিটাল
ভার্সন, যা
অনলাইন বা অফলাইনে কম্পিউটার, ট্যাব এবং স্মার্ট মোবাইল হ্যান্ডসেটে পড়া যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়
জানায়, কাগজে
ছাপানো পাঠ্যপুস্তকের শব্দ, বাক্য, ধারণা- সবই
ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল ভার্সনে পাওয়া যাবে,
তবে তা আকর্ষণীয়,
সহজবোধ্য ও জীবন ঘনিষ্ট করে উপস্থাপিত হবে। জাতীয় প্রেক্ষাপট
বিবেচনা করে ছবি, চিত্র, ডায়াগ্রাম, অডিও, এনিমেশন, ভিডিওসহ মাল্টিমিডিয়া
উপকরণ হাইপার লিঙ্কের
মাধ্যমে সংযোজিত থাকবে। এসব কাজে সহযোগিতা করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের
এটুআই (অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন) প্রকল্প।
ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটাল বইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠে সক্রিয় রাখতে এবং মুখস্ত বিদ্যা পরিহার করে সমস্যার
সঠিক সমাধান খুঁজে বের করার
পর্যাপ্ত অ্যাকটিভিটি সমন্বয় করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
ষষ্ঠ শ্রেণির
শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দিতে বাংলাদেশেই তা তৈরির জন্য দাতা খোঁজা
হচ্ছে বলে জানান শিক্ষাসচিব।
তিনি বলেন, প্রতি বছর ২৫ লাখ
শিক্ষার্থীর হাতে একটি করে ট্যাব সরবরাহ
করলে তা পাঁচ বছর ব্যবহার করতে পারবে। প্রস্তুত ও
মেইনটেন্যান্সের জন্য দেশিয় প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে দাখিল
স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণির
চারটি এবং সাধারণ শিক্ষার অন্য ১২টি বই নিয়ে ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল
বই তৈরির কাজ চলছে বলে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
ক্রমান্বয়ে সপ্তম, অষ্টম এবং নবম-দশম
শ্রেণির বইও ইন্টারঅ্যাক্টিভ
ডিজিটালাইজড করা হবে। ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তকে
পাঠদানের জন্য উচ্চ
গতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন পড়বে। এজন্য প্রত্যন্ত এলাকাতেও অপটিক্যাল
ফাইবার সংযোগের দিকে যেতে হবে বলে জানান শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান।
Post A Comment:
0 comments: